ফজলুল হক, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি : কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের গনেশপুর গ্রামের বাসিন্দা মোছাঃ সালমা শিরিন (৩৪) কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি, তার স্বামী মোঃ সুবাহান গাজীকে ইতালি পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে।
অভিযুক্ত একই গ্রামের মোহাম্মদ আলী গাজীর ছেলে ইতালি’র মানব পাচারকারী চক্রের মাফিয়া মূল হোতা শফিকুল ইসলাম ওরফে ‘কেনা’ এবং তার পরিবারের সদস্যরা দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাঃ মরিয়ম খাতুন, প্রথম স্ত্রী মোছাঃ রাবেয়া খাতুন, ছেলে ইমন গাজী ও মেয়ে ইভা খাতুন সুবাহান গাজীকে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছেন এবং অতিরিক্ত অর্থ দাবি করছেন। সালমা শিরিন সাংবাদিকদের জানান, ২০২৩ সালে শফিকুল ইসলাম তার স্বামীকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেন এবং চুক্তি অনুযায়ী ১১ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাতে আরও ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়, মোট ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু সুবাহানকে ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ায় আটকে রাখা হয় এবং বর্তমানে তিনি সেখানে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। সালমা আরও অভিযোগ করে জানান, অভিযুক্তরা তার স্বামীকে হত্যা বা গুম করার হুমকি দিচ্ছেন এবং আরও অর্থ দাবি করছেন।
এ বিষয়ে তিনি কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং আইনগত সহায়তা কামনা করেছেন। অভিযুক্তরা আত্মীয় হওয়ায় বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী পরিবার চরম আর্থিক ও মানসিক দুর্দশায় রয়েছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, শফিকুল ইসলাম ওরফে ‘কেনা’ এলাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভনে সাধারণ মানুষকে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।
সালমা শিরিনের অভিযোগটি মানব পাচারের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, এবং যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা রোধ করা যায়। যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম খাতুন সাংবাদিকদের জানান, “ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার চুক্তি ছিল। পরবর্তীতে অনেকবার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও ইতালিতে সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সুবাহান গাজী লিবিয়ায় আছেন।”
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।