ফজলুল হক, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি : কালিগঞ্জে পরিবহন কাউন্টার এলাকায় ৪০ বছর ধরে টয়লেট নেই। বিশেষ মুহুর্তে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে। কিছু বলতেও পারেনা। বিষয়টি বিশেষ জনগুরুত্বপূর্ণ অথচ দেখার কেউ নেই। এখানে জরুরী টয়লেট দরকার। এমন দাবী সকল যাত্রী ও কাউন্টার মালিকদের। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকা সহ বাংলাদেশের সকল জেলায় প্রায় ৩০ টির অধিক পরিবহন প্রতিদিন যাতায়াত করে। ৩০ টি পরিবহনের ৮০ টি ট্রিপ আছে। আবার ৮০ টি ট্রিপে কমের পর ২ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।
পরিবহন ছাড়ার আগে যাত্রীরা কালিগঞ্জ পরিবহন কাউন্টারে অপেক্ষা করে। যাত্রী কাউন্টার প্রায় ৩০টি হলেও একটি কাউন্টারে নিজেস্ব কোন টয়লেট ব্যবস্থা নেই। ১৯৮০ সালের দিকে দিশারী, বলাকা, সোনালী পরিবহনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সাথে পরিবহন যোগে যাতায়াতের শুরু থেকে এখানে কোন টয়লেট ব্যবস্থা করতে পারিনি কাউন্টার গুলো। কেন পারিনি এমন প্রশ্নের উত্তরে বি আর টি সি কাউন্টারের ফজলে মাহমুদ বলেন, আমরা স্থায়ী কোন কাউন্টার করতে পারিনি। তার কারন আমাদের কাউন্টার গুলো বার বার ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
কখনও ব্রিজ, কখনও রাস্তা নির্মান করার কারনে আমাদের বার বার জায়গা পরিবর্তন করতে হয়েছে। ভ্রাম্যমান বসার জায়গা পেলেও আমরা যাত্রীদের জন্য কোন টয়লেট নির্মান করতে পারিনি। দীর্ঘদিন ধরে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেছেন সালাউদ্দীন সোনা। বর্তমানে তিনি ইমাদ পরিবহন কাউন্টার পরিচালনা করেন তিনি বলেন, আমাদের কাউন্টারে কোন টয়লেট নেই। বিষয়টি সত্যিই দুঃখ জনক। আমাদের প্রতি ঘন্টায় ট্রিপ আছে। যাত্রীরা যখন জিঙ্ঘাসা করে টয়লেট কোথায়?
তখন আমরা লজ্বা পাই। তারপরেও যাত্রীদের বলি সাইটে নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা করে নেন অথবা সাতক্ষীরায় যেয়ে টয়লেটে যাবেন। শরিফুল ইসলাম একজন যাত্রী, তিনি বল্লেন ২০ মিনিট ধরে বসে আছি। টয়লেটে যাওয়া দরকার কিন্তু এখানে যাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। ২ মিনিট পরে পরিবহন ছাড়বে। আবার দুরে কোথাও যেতে পারছিনা।
রহিম পারভীন হালীমা খাতুন নামে দুই জন যাত্রী যাবে বরিশালে তিনি বলেন, এখানে মেয়েদের জন্য টয়লেট নেই হাইজিন ব্যবস্থা দুরের কথা। আমাদের বড় বিপত্তিতে পড়তে হয়। আমরা এখানে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকি কিন্তু টয়লেটে যেতে পারিনা। আমরা দুর পাল্লার পরিবহনে চড়ার আগে পরিচ্ছন্ন হতে চাইলেও পারিনা। কালিগঞ্জ থেকে সাতক্ষীরা যেতে দেড় ঘন্টা লাগে। ততক্ষন আমাদের অসস্তিতে ভুগতে হয়।
কালিগঞ্জ ব্রিজের উত্তর পার থেকে শহীদ সামাদ স্মৃতি ফুটবল মাঠ পর্যন্ত পরিবহন কাউন্টার হলেও যাত্রীদের টয়লেট দুর্ভোগ সমাধান হয়নি কোনদিন। কোন কর্তৃপক্ষ কেন যাত্রীদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা করলো না বিষয়টি প্রশ্ন করা হয়েছিল কালিগঞ্জ নিয়ে যারা গবেষনা করেন তাদের একজন এ্যাডভোকেট জাফর উল্লাহ ইব্রাহিমের কাছে, তিনি বলেন বিষয়টি আমাদের ব্যর্থতা। যাত্রীরা কাউন্টারে আসবে ফ্রেস হবে, পরিবহনে উঠবে, গন্তব্যে পৌছাবে কোন রকম মানষিক চাপ ছাড়া। কিন্তু সেটি হয়নি বরঞ্চ মেয়েদের জন্য বিষয়টি আরও বিড়ম্বনার।
তবে দ্রুত বিষয়টি সমাধানে সরকারী তরফে কাউন্টারের কাছাকাছি একটি জায়গায় কয়েকটি টয়লেটের ব্যবস্থা করলেও আপাতত সমস্যার সমাধান হবে।
কালিগঞ্জে পরিবহন কাউন্টার এলাকায় দুর পাল্লার যাত্রীদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা করা যায় কিনা এমন বিষয় নিয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ জুয়েল হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি বেশ জনগুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যদি জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন তবে আমরা পাবলিক টয়লেট করে দেব। আমরা বিষয়টি উপলব্দী করছি। আশাকরি একটি ব্যবস্থা হবে। কালিগঞ্জে পরিবহন কাউন্টার এলাকার পাশের একটি পাবলিক টয়লেট ও শৌচাগার নির্মাণের দাবি যাত্রীদের দীর্ঘদিনের। এখান থেকে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী সহ দেশের সকল প্রান্তে নিয়মিত হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। স্থানীয় সরকারের কাছে তাদের দাবী অচিরেই এখানে একটি পাবলিক টয়লেট করা হোক।