সোমবার , ১৬ জুন ২০২৫ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

কালিগঞ্জে জোরপূর্বক জমি দখল, হুমকি ও হয়রানির প্রতিকার দাবিতে গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
জুন ১৬, ২০২৫ ১১:৪৬ অপরাহ্ণ

মীম ইসলাম : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে প্রতিবেশীর উপকার করতে যেয়ে চরম বিপত্তি ও হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন হাফিজা খাতুন নামে এক গৃহবধূ। সুকৌশলে প্রতিবেশী ওই চক্রের জমি আত্মসাতের চেষ্টা, শ্লীলতাহানীসহ নানাবিধ হুমকি, অপপ্রচার ও বিভিন্ন প্রকার হয়রানির কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই গৃহবধূ।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাসানকাটি গ্রামের শামসুর রহমান গাজীর স্ত্রী মোছাঃ হাফিজা খাতুন (৫২) জানান, ১৯৯১ সালে হাসানকাটি গ্রামের কিশোরী লাল বিশ্বাসের ছেলে সূর্যকান্ত বিশ্বাসের নিকট থেকে হাসানকাটি মৌজায় (জেএল ১৬৩) ১৯৯১ সালে ২৬৯২ নং সাব কোবালা দলিলমূলে সাড়ে ২৯ শতক জমি ক্রয় করি।

জমি ক্রয়ের পর থেকে উক্ত জমি হাল জরিপে ৪৬নং খতিয়ানে ৩০ দাগে ২৬ শতক জমি রেকর্ড করিয়ে উক্ত বসতবাড়ি তৈরী করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছি। এর প্রায় ১০ বছর পর একই দাগে উক্ত সুর্যকান্ত বিশ্বাসের ভাই মনিকান্ত বিশ্বাসের নিকট থেকে একই গ্রামের মৃত বিজয় বিশ্বাসের ছেলে দুলাল বিশ্বাস (৮০) কিছু জমি ক্রয় করে বসবাস করছেন। দুলাল বিশ্বাসের ক্রয়কৃত উক্ত বসতভিটার একমাত্র যাতায়াতের পথটি বিভিন্ন পারিবারিক ঝামেলার কারণে জমির মালিকগণ বন্ধ করে দেয়।

এ সময় দুলাল বিশ্বাস তৎকালীন স্থানীয় ইউপি সদস্য এস এম আবু তাহের এর শরণাপন্ন হলে বিকল্প পথ হিসেবে ইউপি সদস্য আমার স্বামী শামচুর রহমান গাজীকে দুলাল বিশ্বাসের যাতায়াতের পথ দেয়ার অনুরোধ জানান এবং পথের জন্য যতটুকু জমি লাগে ততটুকু জমি অন্যপাশ থেকে দেয়ার প্রস্তাব দেন। আমার স্বামী মানবিক দিক বিবেচনা করে ইউপি সদস্যের প্রস্তাবে রাজি হন এবং ইউপি সদস্যের মাধ্যমে হাঁটা চলার জন্য পথের জায়গা দেন। কিন্তু উক্ত পথের জায়গার বিনিময়ে অন্যপাশ থেকে আমকে জমি পূরণ করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে নানাভাবে তালবাহানা করতে থাকে।

পথের বিষয়ে কথা বললে দুলাল বিশ্বাস (৮০), তার ছেলে রমেশ বিশ্বাস (৪০), দেবাশীষ বিশ্বাস (৩৭), জয়দেব বিশ্বাস (৩২) ও তাদের সহযোগী রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে নিতাই বিশ্বাস (৩৫) সহ আরও কয়েকজন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে আমার ও আমার পরিবারের উপর বিভিন্ন হুমকি, ভয়ভীতি ও গালিগালাজ করে আসছে। গত কয়েকদিন আগে উক্ত বসতভিটা অন্যত্র বিক্রি করে দুলাল বিশ্বাস ও তার পরিবার ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে খরিদ্দার দেখানো শুরু করলে আমি ও আমার পরিবার উক্ত পথের বিষয়টি সমাধানের জন্য তাদেরকে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা বিষয়টি সমাধানের পরিবর্তে পূর্বের ন্যায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিতে থাকে।

এমনকি আমার মেয়েদের শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্ন ক্ষতিসাধনের হুমকি দেয়। বিষয়টি তৎকালীন ও বর্তমান ইউপি সদস্য এসএম আবু তাহেরকে অবহিত করলে তিনি পথের জায়গার বিষয়টি বারবার সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সমাধানের উপায় না পেয়ে আমরা আমাদের রেকর্ডিয় জায়গা দখলে নিয়ে দুলাল বিশ্বাস এর বসানো কিছু ইট তুলে দেই। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দুলাল বিশ্বাসের ছেলে রমেশ বিশ্বাস কালিগঞ্জ থানায় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে থানার উপপরিদর্শক রাজীব সরদার সরজমিনে গিয়ে মানবিক বিবেচনায় আপাতত পথটি খুলে দিতে বলেন এবং আমাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট একটি অভিযোগ দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর ঐদিনই একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি যা বিচারাধীন আছে।

কিন্তু দুলাল বিশ্বাসের ছেলে রমেশ বিশ্বাস উক্ত বিষয়টি নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করানোর পাশাপাশি তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচার করে চলেছেন। তিনি আরও বলেন, প্রচার প্রচারণায় রমেশ বিশ্বাস পথটি সরকারি এবং উক্ত পথে সরকারিভাবে ইট বসানো হয়েছে বলে প্রোপাগান্ডা চালালেও প্রকৃতপক্ষে পথটি আমার নামীয় রেকর্ডীয় সম্পত্তির উপর দিয়ে রয়েছে এবং তারা সেখানে রাতের আধারে চুরি করে কিছু ইট বসিয়ে সেটাকে সরকারি বলে প্রচার দিচ্ছে। রমেশ বিশ্বাস দিং ও তাদের অন্যতম সহযোগী নিতাই বিশ্বাস বাইরে থেকে লোক এনে আমার মেয়েদেরকে ধর্ষণ করাবে এবং মামলা মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানিসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিসাধন করবে বলে প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে গত ১৪/০৬/২৫ তারিখে আমার মেয়ে শিরিনা পারভীন (২৬) বাদী হয়ে নিতাই বিশ্বাস এবং রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস, তার ভাই দেবাশীষ বিশ্বাস ও জয়দেব বিশ্বাসের নামে কালিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে যার নম্বর: ৫৮১। হাফিজা খাতুন বর্তমানে স্বামী, মেয়ে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রশাসনের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনকালে হাফিজা খাতুনের দুই মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর