শ্যামনগর ব্যুরো : শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই বনদস্যুকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। সোমবার (১৬ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে পৃথকভাবে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদেরকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের মৃত নওশাদ গাজীর ছেলে নজির গাজী (৫৫) এবং খুলনার কয়রা উপজেলার বৈকারী এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৮)। আটকদের দেয়া তথ্যে পুলিশ তাদের ব্যবহৃত মাছ ধরার নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি ধারালো দা উদ্ধার করে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সিদ্দিক হোসেন ও জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৫-৭ জন অপরিচিত ব্যক্তি যতীন্দ্রনগর বাজারে আসে।
তারা একটি মাইক্রোবাস বা মোটরসাইকেল খুঁজতে থাকায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিভ্রান্তিকর উত্তর দিলে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে ফেলে এবং পুলিশকে খবর দেয়। পরে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।পরবর্তীতে মীরগাং এলাকা থেকে নজির গাজীকেও আটক করে স্থানীয় জনতা। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের সহায়তায় ওই চক্রের নৌকা থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নজির গাজী জানান, তিনি সুন্দরবনের কুখ্যাত ‘জোনাব বাহিনী’র সদস্যদের লোকালয়ে আনা-নেওয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চুক্তিবদ্ধ হন।
অপর আটক দিদারুল জানান, তিনি নজির গাজীর অধীনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন এবং সুন্দরবনে জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন, মোস্তাফিজুর হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বর্তমানে ‘জোনাব বাহিনী’ তেমন সক্রিয় না থাকলেও নজির গাজী, তার ছেলে আব্দুর রহিম, দিদারুলসহ কিছু ব্যক্তি জোনাব বাহিনীর নামে সুন্দরবনে দস্যুতা চালিয়ে যাচ্ছে
। তারা আরও অভিযোগ করেন, মুন্সিগঞ্জের এক পরিবহন ব্যবসায়ীর নৌকা ব্যবহার করে দিদারুল সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। যদিও অন্যান্য নৌকা বারবার দস্যুদের কবলে পড়ছে, ওই ব্যবসায়ীর নৌকায় এমন ঘটনার নজির নেই।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তারা মাছ শিকারীর ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন।