ডেস্ক রিপোর্ট: বাড়িতে প্রাইভেট কোচিং সেন্টার খুলে নানা বাহানায় স্কুল ছাত্রীকে যৌন উৎপীড়নের অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার তালতলা হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক এসএম মোর্তজা আলম লিটন (৪৫) এর বিরুদ্ধে। স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে ২২ মে সাতক্ষীরা সদর থানায় এই অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ পেয়ে সদর থানার পুলিশ ওই শিক্ষকের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু ঘটনা ঘটিয়ে ওই শিক্ষক পলাতক থাকায় তাকে ২৩ মে রাত অবধি আটক যায়নি বলে জানা গেছে। খবরটি নিশ্চিত করেছেন স্কুলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম।
নির্যাতনের শিকার তালতলা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী লিখিত অভিযোগে বলেন, তালতলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) এসএম মোর্তজা আলম লিটন (৪৫) এর বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাগুরা কর্মকারপাড়ায়। তার পিতার নাম মৃত মুনসুর আলী সানা। আমি তালতলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরা দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করি। এসএম মোর্তজা আলম লিটন আমার স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক।
আমি এসএম মোর্তজা আলম লিটনের মাগুরা কর্মকারপাড়ায় তার নিজ বাসায় বিগত ২মাস যাবত বিকাল ৫টা হতে ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়ি। প্রতিদিনের ন্যায় আমি ২২-০৫-২০২৩ তারিখ বিকাল ৫টায় এসএম মোর্তজা আলম লিটনের বাসায় ১২/১৩জন ছাত্র-ছাত্রী প্রাইভেট পড়তে যাই। প্রাইভেট পড়ানোর শেষ পর্যায়ে এসএম মোর্তজা আলম লিটন বিভিন্ন অজুহাতে কৌশলে আমার খাতা দেখতে দেখতে এক ঘন্টার বেশি সময় অতিক্রম করায়।
এ সময় অন্যান্য সকল ছাত্র-ছাত্রীরা চলে যায়। তখন বিকাল অনুমান ৬:১০ ঘটিকা। এসএম মোর্তজা আলম লিটন প্রাইভেট কক্ষের সোফা থেকে উঠে তার অসৎ উদ্দেশ্যে এবং যৌন কামনা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে আমাকে জোরপূর্বক জাপটিয়ে ধরে আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌনপীড়ন ঘটায়।
আমি এসএম মোর্তজা আলম লিটনকে বাধা দিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করলে বিবাদী আমার মুখ চেপে ধরে এবং বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি দেখায়। এক পর্যায়ে আমি নিজের চেষ্টায় তাকে ধাক্কা দিয়ে দ্রæত নিজের বাসায় চলে আসি। বাড়িতে এসে আমি কান্নাকাটি করতে করতে বিষয়টি আমার মা কে জানাই। ওই ছাত্রী আরও জানায়, ঘটনার ৩০ মিনিট পর এসএম মোর্তজা আলম লিটন আমাকে মোবাইল ফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছে। যার অডিও রেকর্ড করেছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পেরেছি। এরআগেও ওই এসএম মোর্তজা আলম লিটনকে একই অপরাধে পৃথকভাবে দুইবার সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছিল। একের পর এক ছাত্রীদের যৌন উৎপীড়নের ঘটনায় বিদ্যালয়ে রীতিমত আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: রেজাউল ইসলামকে জরুরী সভা আহŸানের কথা বলেছি। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির সভায় পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সদর থানার ওসি (তদন্ত) আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতে ওই ছাত্রীর দেওয়া অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে বলে পুলিশের বরাতে জানান স্কুলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম। এব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: রেজাউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মঙ্গলবার রাতে এ প্রতিবেদক কে জানান, যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে তালতলা হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক এসএম মোর্তজা আলম লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটির প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা প্রক্রিয়াধীন।