শেখ মনিরুজ্জামান : সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের সামনে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা/কর্মচারীরা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসমূহ একীভূতকরণ ও অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়ন, অনিয়মিত ও চুক্তিভিত্তিক জনবলকে নিয়মিতিকরণের জন্য মানববন্ধন কেরেছে।
১৯ অক্টোবর (শনিবার) বেলা ৩টার সময় সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মেইন গেটের সামনে এ আন্দোলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতায় সারাদেশে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি দেশের প্রায় ৯০ভাগ এলাকায় ১৪ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ বিতরণ করে আসছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড একটি সরকারী স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। এই সংস্থা তার আওতাধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎনসমিতিকে বে-আইনীভাবে পৃথক সংস্থা করে রেখে তাদেরকে শোষণ-নির্যাতন-নিপিড়ন-দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে।
একদিকে নির্যাতক ও দূর্নীতিবাজ আরইবি এবং তার মাত্র ১৬৮৫ জন কর্মকর্তা কর্মচারী। অপরদিকে নির্যাতিত-নিপীড়িত, ভাগ্য বিড়ম্বিত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও তার ৪৫০০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। আরইবি আইনের বিভিন্ন ধারা লংঘন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোকে পৃথক সংস্থায় পরিণত করে বৈষম্য, শোষণ, নিপীড়ন চালিয়ে আসছে এবং দূর্নীতির মহোৎসব তৈরী করেছে। অডিটের নামে হয়রানী ঘুষ গ্রহণ থেকে শুরু করে বহু ধরনের নির্যাতন তো রয়েছেই।
দূর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের মালামাল ক্রয়, সিস্টেমকে উন্নত না করে পবিসের লোকজনকে সার্বক্ষণিক চাপের মধ্যে রাখা আরইবির পুরানো কৌশল।পবিসের আন্দোলনের ফলে বেআইনিভাবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) নামে পৃথক সংস্থা তৈরি করে নির্যাতনের বৈধতা দিতে জুন’২৪ মাসে আরইবি’র চেয়ারম্যান অত্যন্ত গোপনে উক্ত আইন সংশোধনের চেষ্টা করে।
সংশোধনী প্রস্তাবে “পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড অধ্যাদেশ ১৯৭৭ ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইন ২০১৩ প্রবর্তনের তারিখ হইতে কার্যকর ও অঙ্গীভূত হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে”-মর্মে উল্লেখ করা হয়, যা তাদের দীর্ঘদিনের অপকর্মের প্রমাণ বহন করে। আরইবির দূর্নীতির অসংখ্য পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদন, ইলেকট্রনিক ও সোশাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও ফুটেজের তথ্য দেখে এই দূর্নীতিবাজ ও নির্যাতক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী, বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। অতি সম্প্রতি আরইবি বহিরাগতদের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ঢুকিয়ে বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা বিপর্যস্ত করে পবিসের উপর দায় চাপিয়ে দেয়ার নীলনকশাসহ অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
আরইবি কর্তৃক নিম্নমানের মালামাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপর চাপিয়ে দিয়ে জনগণের ভোগান্তি, গ্রাহক হয়রানী করছে। আরইবি পরিকল্পিতভাবে মাঠ পর্যায়ে কমরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা/কর্মচারীদের গ্রাহকের রোষানলে দাঁড় করাচ্ছে এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইন-২০১৩ অমান্য করে সমিতিওসমূহকে আলাদা ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিনিয়ত নির্যাতন নিপীড়ন করছেন। এরই প্রতিবাদস্বরূপ ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলন মূলত গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকরণে বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আন্দোলন। আন্দোলনে উপস্থিতির মধ্যে বক্তব্য রাখেন, লিটন চন্দ্র দে-সহকারী মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ), মঞ্জুরুল আক্তার-সহকারী মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) ও জাকির হোসেন-লাইন টেকনিশিয়ান। ছাত্রদের মাঝ থেকে বক্তব্য রাখেন পাটকেলঘাটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মিতু মনি।