বিশেষ প্রতিনিধি : সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের বাঁধনডাঙ্গা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এলাকাবাসী অভিযোগ করার পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবর সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করেছেন।
সরেজমিনে তদন্ত কালে তিনি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মাষ্টারসহ অভিযোগকারী ১৪ জনের মধ্যে উপস্থিত ১১ জন স্বাক্ষী তাদের স্বাক্ষ্য দেন। এসময় তিনি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথেও কথা বলেন। নুনগোলা এনবিবিকে আল মদিনা দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত তদন্তকালে শতশত স্থানীয় লোকজন উপস্থিত থেকে পক্ষে-বিপক্ষে নানান বক্তব্য দেন।
তবে উপস্থিত অধিকাংশ ব্যক্তির ১৯৭১ সালে পূর্বে জন্ম না হওয়ায় তাদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে তদন্ত কালে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ সরদার এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, সিরাজুল মাষ্টারসহ আমরা একসাথে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।
স্থানীয় কাছেদ কারিকর, আব্দুস সামাদ, আঃ রহিম ও অমির সরদারসহ একাধিক ব্যক্তি আরও জানান, ১৯৭১ সালে আমাদের বয়স ১৩/১৪ বছর ছিল। আমরা সবাই জানি তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেছেন এবং আমরা তার প্রত্যক্ষদর্শী। অপরদিকে একই এলাকার মৃত ট্যানাই চৌকিদারের পুত্র ইনছার আলী জানান, ১৯৭১ সালে আমার বয়স ১৭/১৮ বছর ছিল। আমার পিতা তখন চৌকিদার থাকায় আমি এলাকার কে কি করেছিল তা আমার জানা আছে কিন্তু সিরাজ মাষ্টার কোথাও মুক্তিযুদ্ধ করেছে এরকম কোন প্রমাণ নেই।
এছাড়া ওই গ্রামের শওকাত হাজী, নিমাই চন্দ্র বিশ্বাস, তফিলউদ্দীন, আহাদ আলীসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, আমরা তাকে কোথাও যুদ্ধ করতে দেখিনি। এব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছে। আমার বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এসময় তিনি সঠিক তথ্য উদঘাটন পূর্বক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।
তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ জানান,বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সুর্য সন্তান। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে তদন্ত করা স্পর্শকাতর ইস্যু। এখানে যারা অভিযোগের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন তাদের অধিকাংশের বয়স ১৯৭১ সালে ১০ বছরের কম হওয়ায় তদন্ত সম্পন্ন করা অনেকটা কঠিন। তবে খুব শীঘ্রই তদন্ত কাজ শেষ করে রিপোর্টের বিষয়টি আপনাদের জানানো হবে।