দেবহাটা ব্যুরো : দেবহাটা সহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যেবাহী খেজুর গাছের রস ও গুড়-পাটালি সহ খির-পায়েশ খাওয়ার ধুম পড়া শীত মৌসুমের আনন্দ উৎসবের দিন গুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। আগে শীতকাল আসলে মেয়েরা বেড়াতে আসত তাদের বাপের বাড়িতে এবং মেয়ের জামাইদের দাওয়াত করা হত তাদের শশুর বাড়িতে শুধুমাত্র খেজুর রসের তৈরি খির, পায়েশ সহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা খাওয়ার জন্য, গ্রামাঞ্চলে খেজুরের রসের তৈরি খির পিঠা, পায়েস খাবারের ধুম পড়ে যেত।
বর্তমানে এখন গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গেছে, আর যে খেজুর গাছ গুলো আছে সে গাছ গুলো রুগ্ন সরু ও নি:স্তেজ হয়ে যাচ্ছে। তাহার কারনে গাছ গুলোতে আগের মত রস হচ্ছে না।
দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুষ্পকাটি গ্রামের মৃত্যু আ: রহিম সরদারের পুত্র আ: সবুর গাছী (শিউলি) বলেন, আমার নিজের কোন খেজুর গাছ নেই, আমি অন্য লোকের খেজুর গাছ গুলো রোজ হিসাবে গাছির কাজ করি। ১ লা কার্তিক মাস থেকে খেজুর গাছ ঝোড়া হয়, তার কয়েক দিন পর গাছ চাছার কাজ করি। গাছ প্রতি ঝোড়া ও চাছা বাবদ ১৫০/-টাকা করে নেই এবং গাছ চাছার ৭ দিন পর গাছ চাছা ছেলা করার পরে রস আসে, তখন গাছ প্রতি ২০ টাকা করে নেওয়া হয়। ৭ দিন পর পর গাছ চাছা ছেলা করে অথ্যাৎ রস হয়। এই ভাবে চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে গাছে রস আসা কমে যায়, কাঙ্খিত রস না পাওয়ার কারণে গাছ কাটা বন্ধ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আমি এবছর সপ্তাহে ৫ দিন খেজুর গাছ চাছা ছেলা করি, প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ টি গাছ চাছা ছেলার কাজ করি। গাছ প্রতি গড়ে আধা ভাড় রস হয়, কোন কোন গাছে একটুও রস হয় না, সেই গাছ গুলো ঝোড়ার পরে চাছা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এবছর ভাড় প্রতি রসের দাম ২০০ শত টাকা করে বিক্রি হচ্ছে তবুও এবছর খেজুরের রস প্রায় দুষ্প্রাপ্য বলে গাছিরা জানান।