মণিরামপুর প্রতিনিধি : মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নে টানা তাপপ্রবাহে ও প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। আবার মাঝেমধ্যে লোডশেডিং আর প্রচন্ড গরমের কারণে গ্রামের সর্বত্রই যান্ত্রিকযুগেও হাতপাখার কদর বেড়েছে। তবে শহরের তুলনায় গ্রামঅ্ঞ্চলের লোডশেডিং বেশী হওয়ায়। গ্রামে তালপাতার হাতপাখার কদর বেশীই। আধুনিক ও যান্ত্রিক যুগে অনেকটাই বিলুপ্তির পথে হাতে তৈরী হাতপাখা টা বা গরীবের এসি পাখা। তারপরও অনেক পরিবার আছে এ হাতপাখা তৈরীর কাজে।
জানাযায়, হাতপাখা তৈরী করতে লাগে। এ হাতপাখা তৈরীর প্রধান কাচামাল হলো তালগাছের পাতা, বাঁশ, সুতা ও লোহার চিকন তার। আর সাজ সজ্জা কারার জন্য লাগে রং। কয়েকজন নারী রা মিলে এসকল রংবে রংয়ের কাজ গুলো করে থাকেন।অনেকেই কাটছেন বাশ, কেউবা আবার সে গুলো পাতা কেটে সাইজ করছেন। সকলেই ব্যস্ত য় পারকরছেন পাখা কারিগর রা। হাতপাখা তৈরীর প্রধান উপকরণ তালপাতা সংগ্রহ করতে চলে যাচ্চে অনেক দুরে।
তারা গাছ মালিকের সাথে কথা বলে প্রতি তালপাতা ৭/৮ টাকা দরে কিনছেন। আর সে একটি পাতা থেকে ৮/৯ টি পাখা তৈরী করছে।প্রতি পিচ বাঁশ ক্রয় করা হয় ১৫০/১৮০ টাকা দরে। প্রতিটি বাঁশ থেকে শতাধিক পাখার বেত তৈরী করা যায়।যা পাখা প্রতি খরচ হয় ৬/৭ টাকা। পাইকারি বিক্রয় করা হয় ১০ টাকা ১২ টাকা। আর খুচরা বিক্রয় করা হয় ২০টাকা থেকে ৩০ টাকা পযর্ন্ত। আমাদের মনোহরপুর বাজারে তালপাতার পাখা বিক্রেতা জানান, আমার কেনা পড়েছে ১০/১৫ টাকা আর বিক্রয় করছি ২৫/৩০ টাকা। একজন ক্রেতা পল্লী চিকিৎসক ডা. গৌর মল্লিক জানান প্রায় প্রতি বছর আমার পাখা কিনতে হয়।
বাড়ীতে বৈদ্যুতিক পাখা আছে তারপরও কিনে রাখি। এই গরম সময় ঠিকঠাক থাকবে। পরে শীতকাল আসলে পাখা ভেঙ্গে যায়। হাতপাখা কারিগর মনোহরপুরের চিত্ত রন্জন সরকার বলেন,আমি অল্পকিছু পাখা তৈরী করি।বাজারে আমার তৈরী পাখার চাহিদা আছে কিন্তু এখন আর পারি না বয়স হয়েছে তো তার জন্য।তবে আধুনিকতার যুগে আমরা বসবাস করে ফেলে আসা জিনিসের কদর আমরা বোঝার চেষ্টা করি না। আমাদের সমাজ থেকে প্রায় সব কিছু বিলুপ্তির পথে। আকড়ে রাখার কোন চেষ্টা আমাদের সমাজে নেই।
বিগত দিনে মেলায় এসব পাখা কিনতে পাওয়া যেত। পাখা ক্রেতারা জানান,আমার মেয়ের খুব গরম লাগে এ জন্য হাতপাখা একটা বাড়ী নিয়ে রাখছি। যদি কারেন্ট চলে যায় তখন এটা দিয়ে বাতাস করবো।হাতপাখার বাতাস একটু ঠান্ডা আছে। এই প্রাচীন হাতপাখা তৈরীর যে তালগাছ সেটাও আমাদের সমাজ থেকে আস্তে আস্তে বিলুপ্তি হতে যাচ্ছে। তখন আধুনিক প্লাস্টিকের পাখায় বাতাস করতে হবে। তবে এটার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে উদ্যােগ গ্রহণ করতে হবে। কারিগরদের তৈরী পাখা বিক্রয় ভালো হয়। তাহলে তারা এ পেশা ছেড়ে যাবে না। যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। আর চলতে থাকবে। যদি আমাদের সমাজ থেকে তালগাছ একেবারেই বিলুপ্তি না হয়ে যায়।