বিলাল হোসেন শ্যামনগর : শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরাতে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহাউৎসব। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখালী, গবুরা ৬ ও ৯নং সহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ বোরিং মেশিনসহ কার্গো ড্রেজার দিয়ে যত্রতত্র ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গাবুরা দ্বীপ অঞ্চল হওয়ায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহাউৎসব।
গত ২৪ মে ২০১৭ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিশাখা-২ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মানউন্নয়ন এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রশমন এবং টেকসই পরিবেশ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১ নম্বর আইন) এর ৫ নম্বর ধারার উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ১৯৯৯ সালে সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকাকে সরকার কর্তৃক প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ঊপড়ষড়মরপধষষু ঈৎরঃরপধষ অৎবধ), ঊঈঅ অর্থাৎ ইসিএ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেন।
পরবর্তীকালে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি, সুন্দরবন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার মৌজাসমূহের নাম সন্নিবেশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনটি ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ সালে ২২.০০.০০০০.০৭৩.১৩.০০৪.২০১৪/১৩ সংখ্যক স্মারকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের স্থলাভিষিক্ত হয়। সুন্দরবন প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকার সকল পূর্ণ ও আংশিক মৌজার নাম এ সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে সন্নিবেশ করা হয়। সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত ইসিএভুক্ত এলাকা হিসাবে শ্যামনগরের ৫২টি গ্রাম (ঊপড়ষড়মরপধষষু ঈৎরঃরপধষ অৎবধ) ঊঈঅ অর্থাৎ ইসিএ এলাকা হিসেবে দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে গাবুরা উল্লেখযোগ্য।
তবে প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে বালু উত্তলনের ঘটনায় জুয়েল নামের একজন সহযোগী বলেন, বরগুনার মেয়র ঠিকাদার শাহাদাৎ হোসেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে বলে বালু উত্তোলনের করছেন। আমরা কিছু জানি না, আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন। অন্যদিকে বোরিং মেশিনের মালিক কয়রার রেজাউল করিম বলেন, গতকাল মেম্বারের বালু উত্তোলন করেছিলাম আর আজ পাশের একজনের উত্তোলন করে দিচ্ছি।
তবে স্থানীয় রফিকুল, হযরত, আরিফ, শুকর আলী, মনিরুল জানিয়েছেন, অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনে পরিবেশগত সংকটাপন্ন। বালু উত্তোলনে টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি করতে বেড়িবাঁধের ক্ষতির সংখ্যা বেশি। আবার এলাকা থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলন করলে পরিবেশগত ক্ষতির সমূখিন হতে হবে। গাবুরা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান বলেন, আমি পুলিশ পাঠিয়ে কাজটি বন্ধ করেছিলাম কিন্তু পূনরায় যদি কাজ করে থাকে তবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। স্থানীয় সচেতন মহল জানান, ভাঙ্গা গড়ার খেলায় মেতেছে সুবিধাবাদীরা। এদের কোনমতেই থামানো যাচ্ছে না।