সোমবার , ৬ মার্চ ২০২৩ | ৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অধ্যক্ষ আনিসুর রহিমের ৬৯তম জন্মদিন আজ

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
মার্চ ৬, ২০২৩ ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

সকাল ডেস্ক : ‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়’। এই অমোঘ সত্যের কাছে হার মেনে ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারী দুপুরে অনেকটা আকষ্মিকভাবে পরপারে পাড়ি জমান সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা (সার্টিফিকেট গ্রহণকারী নন) অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম। আজ ৭ মার্চ সাতক্ষীরার এই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী গুণী ব্যক্তির জন্মদিন। বেচেঁ থাকলে আজ ৬৯ বছরে পা রাখতেন তিনি।

১৯৫৫ সালের আজকের এইদিনে নড়াইলে জন্মগ্রহণ করেন আনিসুর রহিম। তাঁর পিতা আরিফুর রহিম সেসময় নড়াইল সিও রেভিনিউ বিভাগে ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন। নড়াইল থেকে তাঁর পিতা বদলি হয়ে আসেন সাতক্ষীরায়। অধ্যাপক আনিসুর রহিম সাতক্ষীরা সিলভার জুবলি প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে সাতক্ষীরা থেকে বদলি হয়ে বরগুনায় যান আরিফুর রহিম। ১৯৭১ সালে বরগুনা থেকে মেট্রিক পাশ করেন। মেট্রিকুলেশন পাশ করে যশোর এমএম কলেজে ভর্তি হন। যশোর এমএম কলেজ থেকে ১৯৭৩ সালে এইচএসসি পাশ করেন। অধ্যয়নকালীন সময়ে আনিসুর রহিম যুক্ত হন ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে। সেসময় যশোরে তাঁর নেতৃত্বে ছাত্র ইউনিয়ন শক্তিশালী সংগঠনে রূপ নেয়। এরপর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স পাশ করে সহপাঠী দিলারা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

অধ্যাপক আনিসুর রহিমরা ৬ ভাই ও ৩ বোন। তাঁর দুই ছেলে এবং এক স্ত্রী। পারিবারিকভাবে ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান সবাই সুপ্রতিষ্ঠিত। ইতিমধ্যে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। বরগুনায় থাকার সময় অধ্যাপক আনিসুর রহিম যোগদেন মুক্তিযুদ্ধে। সরাসরি যুদ্ধ করেন। সহযোদ্ধাদের নিয়ে গড়ে তোলে শক্তিশালী ব্রিগেড। তবে মুক্তিযুদ্ধের সনদের জন্য তিনি কখনো চেষ্টা করেননি। ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। ‘সাপ্তাহিক একতা’ পত্রিকায় তাঁর হাতেখড়ি। এরপর কলম ধরেছেন একাধিক পত্রিকায়, লিখেছেন অনর্গল।

দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর অসংখ্য লেখা প্রকাশ হয়েছে। প্রত্যেকটি লেখায় তিনি অধিকার ও ন্যায়ের কথা বলেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি সস্ত্রীক শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন সাতক্ষীরা মহিলা কলেজে। সাতক্ষীরা মহিলা কলেজ জাতীয়করণ হলে তিনি চাকরি ছাড়েন। এরপর তিনি দেবহাটার খান বাহাদুর আহসানউল্লা কলেজে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে ফিরে আসেন সাতক্ষীরা ডে-নাইট কলেজে। এ কলেজে তিনি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে সুনামের সাথে চাকরি জীবন সম্পন্ন করেন তিনি। এদিকে কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি শিশু শিক্ষা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

গড়ে তোলেন আসমানী শিশূ নিকেতন ও পরে সাতক্ষীরা প্রি-ক্যাডেট স্কুল। তার হাত ধরেই জেলায় কিন্ডার গার্টেন শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রথম সূচনা করে। এরপর জেলাজুড়ে কিন্ডার গার্টেন শিক্ষা ব্যবস্থায় যে বিপ্লব দেখা যায়, যা অধ্যাপক আানিসুর রহিমের চিন্তার ফসল। ১৯৯৬ সালে তিনি সাতক্ষীরার গণমানুষের কণ্ঠস্বরকে একসূত্রে গেঁথে প্রকাশ করেন দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র পত্রিকা। দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র প্রকাশ হলে জেলায় সাংবাদিকতায় আসে নতুন গতি। আসে এ পেশার প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস।

আনিসুর রহিমের সম্পাদনায় দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র পত্রিকায় সাহসী সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে এক ধরণের সামাজিক আন্দোলন। দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্রে সাহসী প্রতিবেদন ছাপার কারণে কয়েকবার হামলার শিকার হন আনিসুর রহিম। দুর্বৃত্তরা তাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে। হুমকি দিয়েছে। কিন্তু হামলা ও হুমকি তাকে সত্যের কক্ষপথ থেকে এক বিন্দু সরাতে পারেনি।

দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র বন্ধ হয়ে গেলে তিনি বীরমুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীন প্রতিষ্ঠিত দৈনিক পত্রদূতের সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে ভূমিহীন আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। বাঁকাল ইসলামপুরে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যে আন্দোলন শুরু হয় সেই আন্দোলনে তার সাহসী ভূমিকা আজও অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা যোগায়। ১৯৮৮ সালের ৪ অক্টোবর এই ভূমিহীন আন্দোলনের কারণেই তিনি গ্রেপ্তার হন। তাকে সাতক্ষীরা থেকে যশোর কারাগারে রাখা হয়। ৬ মাসের অধিক সময় তিনি কারাগারে ছিলেন।

১৯৯৬ সালের ১৯ জুন দৈনিক পত্রদূতের প্র্রতিষ্ঠাতা বীরমুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীন ঘাতকের গুলিতে শহিদ হন। স. ম আলাউদ্দীন হত্যার প্রতিবাদে জেলাজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হয়। অধ্যাপক আনিসুর রহিম ছিলেন সেই আন্দোলনের প্রথম সারিতে। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র পত্রিকা এসময় সাহসী ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি বারবার কলম ধরেছেন। মুত্যু পূর্ববর্তী সময়ে অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক, অধুনালুপ্ত দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র পত্রিকার সম্পাদক, সাতক্ষীরা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক, সুলতানপুর আজাদী সংঘ ক্লাবের সদস্য, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক পত্রদূতের সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করাসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।

আপোষহীন সাহসী সাংবাদিকতা করার কারণে অসংখ্যবার হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন আনিসুর রহিম। নির্ভীক সাংবাদিক হিসেবে তিনি অন্যায় অসত্যের কাছে মাথানত করেননি। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার রহস্য তিনিই সর্বপ্রথম উন্মোচন করেন। সেই সূত্র ধরে সারাদেশে একে একে ধরা পড়ে জঙ্গিরা। ‘শামুকের আবরণ ভাঙলে যেমন দামি মুক্তা বেরিয়ে আসে’ তেমনি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম মারা যাওয়ার পর বেরিয়ে আসে তিনি কত বড় মানুষ ছিলেন। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর কবিতায় বলেছেন, ‘সেই ধন্য নরকুলে লোকে যারে নাহি ভুলে, মনের মন্দিরে নিত্য সেবে সর্বজন।’ একারণে, আনিসুর রহিমের মতো মানুষদের প্রস্থান আছে, তবে মৃত্যু নেই। তিনি বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয় ও ইতিহাসের পাতায়।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর

আপনার জন্য নির্বাচিত

কালীগঞ্জের বিষ্ণুপুরে চার দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

ভোমরা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন : সভাপতি জনি, সাধারণ সম্পাদক জিয়া

মনিরামপুর প্রেস ক্লাব নির্বাচনে গঠিত কমিশনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর

সাতক্ষীরা স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের চড়ুইভাতি

বাসসের সাতক্ষীরা সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান

সুন্দরবন সেবা কল্যাণের পক্ষ থেকে জরায়ু টিউমার আক্রান্ত নারীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান

সুজনের জেলা কমিটির সভা

নৈকাটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় কুরআন প্রতিযোগিতা

উন্নত সেবার মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় আস্থা ফেরাতে হবে : এমপি রুহুল হক

ব্র্যাক আরবান ডেভেলপমেন্ট’র উদ্যোগে অ্যাডভোকেসি মিটিং